ব্রেকিং:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
  • শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪ ||

  • চৈত্র ১৪ ১৪৩০

  • || ১৮ রমজান ১৪৪৫

সর্বশেষ:
রমজানে সিলেটসহ সারাদেশে নতুন সময়সূচিতে চলছে অফিস সিলেটে স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্সের আত্মহত্যা যুবকের! পবিত্র রমজান মাসের মর্যাদা, ইবাদত ও ফজিলত রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় জৈন্তাপুরে বাজার মনিটরিং চুনারুঘাটে দুর্ঘটনায় চাশ্রমিক-সন্তান নিহত অস্ত্রোপচারে দুর্ঘটনার দায় হাসপাতাল ও চিকিৎসকের: স্বাস্থমন্ত্রী হাইতির প্রধানমন্ত্রী হেনরির পদত্যাগ গত ১৫ বছরে দেশের চেহারা বদলে গেছে : এম এ মান্নান এমপি বিএসএমএমইউ’র নতুন উপাচার্য ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক রমজানের প্রথম তারাবিতে সিলেটে মুসল্লিদের ঢল রমজানে আবহাওয়া যেমন থাকবে সিলেটে?
৪৭৪

বিমানবন্দরেই কাটলো তার ১৮ বছর!

সিলেট সমাচার

প্রকাশিত: ২০ নভেম্বর ২০১৮  

নির্দিষ্ট গন্তব্যে ছুটতে ট্রেন স্টেশন বা এয়ারপোর্টে যেতে হয়। কখনো ট্রেন আসতে বিলম্ব হলে আবার ফ্লাইট পিছিয়ে যাওয়া এসব কারণে অপেক্ষাও করতে হয়। আর এ ঘটনা স্বাভাবিক! কিন্তু ১৮ বছরের অপেক্ষা করার কথা কি কখনো কল্পনা করা যায়! মেহরান কারিমি নাসেরি যিনি একটি ভুলের কারণে এয়ারপোর্টে আটকে পড়েন। এটি নিছক গল্প মনে হতে পারে, কিন্তু আপনি বিশ্বাস না করলেও এটি বাস্তব ঘটনা।২০০৪ সালে ‘দ্য টার্মিনাল ম্যান' বইটি প্রকাশিত হওয়ার পর সারাবিশ্বে এই মানুষটিকে নিয়ে হই-চই পড়ে যায়। এই বইটি নাসেরির লেখা। টার্মিনালে অবস্থানরত দীর্ঘ সময় কাটানোর মুহূর্তগুলোই তিনি লিখেছেন বইটিতে। তবে কীভাবে এবং কেন তাকে এয়ারপোর্টে এতটা বছর কাটিয়ে দিতে হলো?

ইরানের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন নাসেরি। বাবা ছিলেন গ্রাম্য ডাক্তার, মা ব্রিটিশ নার্স। বাবা-মায়ের ইচ্ছে, ছেলে একদিন বড় ডাক্তার হবে। সে কারণে ছেলেকে ইরান থেকে পাঠিয়ে দেয়া হলো ইংল্যাণ্ড। কিন্তু রাজনীতির প্রতি দূর্বলতা ছিলো নাসেরির। ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করতে গেলেও রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে পারেননি তিনি। এদিকে, ইরানের ২ হাজার ৫০০ বছরের পুরানো রাজতন্ত্র হুমকির মুখে পড়ে। পুরো ইরানজুড়ে উত্তাপ। তরুণ প্রজন্ম বিপ্লবের নেশায় উন্মুখ! ঘটনাটি বার বার তাড়া করছিলো নাসেরিকে। আন্দোলনে তিনিও যোগ দেন। বিপ্লবে অংশ নিতে রাজতন্ত্রের কর্তাব্যক্তিদের নজরে পড়েন তিনি। আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় সেইসঙ্গে পাসপোর্টও কেড়ে নেয়া হলো।

নাসেরির মা-বাবারও এ বিষয়ে কিছু করার ছিলো না। তাই বাধ্য হয়ে নাসেরি ‌'রাজনৈতিক আশ্রয়' খুঁজতে থাকেন। অনেক চেষ্টা করেও কোনো দেশে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় না পেয়ে চার বছরের মাথায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি।এই হতাশার মাঝে খানিকটা আলোর সন্ধান পান যখন বেলজিয়াম তাকে জায়গা দিতে রাজি হয়। তবে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হলো। যদিও তিনি সব শর্ত মেনে নেন।বেলজিয়ামে আশ্রয় মেলার পর সেখানে কাটলো নাসেরির ৬ বছর। এদিকে,১০ বছর হয়ে গিয়েছে বাবা মায়ের সঙ্গে কোনো দেখা হয় নি তার। আর কয় বছর কাটানো যায়? সিদ্ধান্ত নিলেন ইংল্যান্ডে পাড়ি দেবেন। নাসেরি রওনা হলেন, বেলজিয়াম আর ইংল্যান্ডের মাঝে পড়লো প্যারিস।


সিনেমাকেও হার মানায় এ গল্প

তার জীবনের সবেচেয়ে সঙ্কটময় গল্পের শুরুটা এখানেই। প্যারিসে গিয়েই হারিয়ে ফেলেন নিজের ব্যাগ। অথচ সেই ব্যাগেই ছিলো আশ্রয় পাওয়ার সব কাজপত্র। কাগজপত্র ছাড়া ভ্রমণে সমস্যা হবে জেনেও ইংল্যান্ডে যাবার সিদ্ধান্ত নিলেন নাসের। ঠিকঠাক কাগজপত্রের অভাব থাকা সত্ত্বেও ফ্রান্স তাকে আটকালো না। প্যারিসের চার্লস দ্য গোল এয়ারপোর্ট থেকে তিনি রওনা দিলেন, গন্তব্য লন্ডন। সেখানে নামার সঙ্গে সঙ্গেই কাগজ-পত্র না থাকায় তাকে ধরে ফেললো পুলিশ। পুলিষের ভাষ্য ছিলো, ‌'তিনি অবৈধভাবে ফ্রান্সে ঢুকতে চাইছেন। এছাড়া এই মানুষটির কোনো দেশই নেই! তাই যেখান থেকে এসেছেন সেখানে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হবে।' কোনো কাগজপত্র ছাড়া তার পক্ষে কোথাও যাওয়া সম্ভব না এখন, আর এয়ারপোর্ট থেকে বের হবার চেষ্টা করলেও তিনি নিশ্চিত গ্রেফতার হবেন অবৈধভাবে ফ্রান্সে প্রবেশের চেষ্টার জন্য।

২৬ আগস্ট, ১৯৮৮। নাসের পড়লেন দোটানায়। তিনি নিরুপায় হয়ে এদিক ওদিক ভাবতে গিয়ে চার্লস দ গোল এয়ারপোর্টের টার্মিনাল ওয়ানে কিছুদিন অবস্থান নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। তখন তার কল্পনায়ও ছিলো না, তার সামনে কেমন জীবন অপেক্ষা করছে। তিনি এয়ারপোর্টের মধ্যকার একটি রেষ্টুরেন্টের সামনের বেঞ্চকে বানিয়ে নিলেন নিজের বিছানা। এরমধ্যে একজন আইনজীবী জোগাড় করলেন এই ভোগান্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করার জন্য। ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেই আইনজীবী অনেক লড়লেন একটি ট্রানজিট বা রিফিউজি ভিসার জন্য। কিন্তু লাভ হলো না।

তারপর তিনি বেলজিয়ামের কথা বললেন যদি আবারো তারা সেসব কাগজপত্রের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু তাকে জানানো হলো, কাগজপত্রগুলো তাকে আবার দেয়া হবে যখন তিনি বেলজিয়ামে উপস্থিত হয়ে নিজের পরিচয় নিশ্চিত করবেন। তিনি পড়লেন এক শক্ত ঝামেলায়! এখান থেকে বেরই হতে পারবেন না তিনি! তাই অনেক চেষ্টা করেও নাসেরি তার মুক্তির কোনো পথই বের করতে পারলেন না।

এয়ারপোর্টের সময়গুলো

একে একে ১৮ বছর কেটে গেলো সেই বেঞ্চে। লাল রঙ নাসেরির খুব প্রিয় হয়ে ওঠে। কারণ বেঞ্চটির রঙ ছিলো লাল! খাবার, বাথরুম সবকিছুর ব্যবস্থাতো আছেই এয়ারপোর্টে, আর টার্মিনাল ওয়ানের কর্মচারীরা সকলেই তার বন্ধু বনে গিয়েছিল। প্রচুর বই পড়তেন তিনি, অনেক সময়ই তাকে দেখা যেত বই হাতে। আর সেসময়ই তিনি আত্মজীবনীটি লিখেন। এয়ারপোর্টে থাকা অবস্থাতেই তাকে ঘিরে কিছু প্রামাণ্যচিত্র তৈরি হয়। এরপর কিংবদন্তী চিত্রপরিচালক স্টিফেন স্পিলবার্গ নাসেরির গল্প শুনে তার গল্পটি নিয়ে একটি সিনেমা বানানোর চিন্তা করেন। এই গল্পের মতো একটি গল্প নিয়েই তৈরি হয় টম হ্যাংক্স অভিনিত ‘দ্য টার্মিনাল’ সিনেমাটি। ছবিটি বিশ্বব্যাপী খুবই খ্যাতি অর্জন করে, তবে নাসেরির গল্পের সঙ্গে সিনেমাটির গল্পের পার্থক্যও কম ছিল না।

মুক্তি মিললো, তবে স্বাধীনতা নয়!

নাসেরি খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সময়টি ছিলো ২০০৬ সাল। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর তার পাকাপোক্ত আবাসস্থল হয় ফ্রান্সের একটি আশ্রম।

সিলেট সমাচার
সিলেট সমাচার